অন-লাইন থেকে আয় করার জন্য সবচেয়ে জনপ্রিয় মাধ্যম হচ্ছে গুগোল অ্যাডসেন্স এবং Adsense এর সকল নিয়ম সঠিকভাবে অনুসরণ করে সবচাইতে সহজে আয় করার উপায়ও বটে। আপনি যদি Google Adsense এর সকল Guideline অনুসরণ করে ব্লগিং করেন তাহলে খুব সহজেই Adsense Approved করে সঠিকভাবে বিজ্ঞাপন শো করিয়ে আপনার ব্লগ থেকে অনেক ভালমানের টাকা উপার্জন করতে সক্ষম হবেন।
অনেকে দীর্ঘ প্রচেষ্টার ফলে যদিও Google Adsense অনুমোদন করতে সক্ষম হন কিন্তু আয় বৃদ্ধি করতে না পেরে হতাশ হয়ে পড়েন। যার ফলে কিছু লোক Google Adsense ব্যবহার করার বিপক্ষে সাপোর্ট দেন। আসলে এ রকম ধারনা করা মোটেও ঠিক নয়। Google Adsense আয় বৃদ্ধি না হওয়ার প্রধান কারন হচ্ছে এর সঠিক ব্যবহার করতে না পারা। আপনি যদি সঠিকভাবে ঠিক জায়গায় Google Adsense বিজ্ঞাপন বসিয়ে নিয়মানুসারে ব্যবহার করতে পারেন তাহলে খুব সহজে আপনার ব্লগ হতে ভালমানের এমাউন্ট অর্জন করতে পারবেন। নিচের সবগুরি টিপস যদি সঠিকভাবে অনুসরণ করেন তাহলে Google Adsense আয় বৃদ্ধি পাবেই
এক নজরে বিস্তারিত
1 ০১. গুগোল অ্যাডসেন্স পলিসি অনুসরণঃ
2 ০২. রেস্পন্সিভ এডসেন্স অ্যাড ইউনিটস ব্যবহার করাঃ
3 ০৩. সঠিক জায়গায় বিজ্ঞাপন কোড বসানঃ
4 ০৪. নিয়মিত কনটেন্ট পাবলিশ করাঃ
5 ০৫. ব্লগের লোড টাইম বৃদ্ধি করাঃ
6 ০৬. অন্য বিজ্ঞাপন রিমুভ করাঃ
7 ০৭. গুগোল অ্যাডসেন্স রেফারস ব্যবহার করাঃ
8 ০৮. গুগোল প্রোডাক্টস মনিটাইজেশন ব্যবহারঃ
9 ০৯. গুগোল অ্যাডসেন্স স্ট্যান্ডার্ড অ্যাড সাইজ ব্যবহারঃ
10 ১০. হাই পেয়িং অ্যাডস ও কিওয়ার্ডস:
০১. গুগোল অ্যাডসেন্স পলিসি অনুসরণঃ
বেশীরভাগ পাবলিশাররা এ বিষয়টি নিয়ে কখনও ভাবেন না। তারা মনেকরেন এটি ব্লগের ক্ষেত্রে তেমন কোন প্রভাব ফেলবে না। Google Adsense এ আবেদন করার আগে ও কোড বসানোর পরে তাদের পরিপূর্ণ Adsense Guideline পড়ে নিয়ে সবকিছু সঠিকভাবে অনুসরণ করতেই হবে। Google Adsense এর Guideline অনুসরণ না করে কোন কিছু করলে আপনার আয় বৃদ্ধির হওয়ার পরিবর্তে যে কোন সময় আপনার Google Adsense একাউন্ট ব্যান হতে পারেন। নিচে আমরা Google Adsense এর প্রধান কয়েকটি বর্জনীয় বিষয় তুলে ধরলাম।
নিজের ব্লগের বিজ্ঞাপনে ক্লিক না করা।
Paid Traffic বা Clicking ব্যবহার না করা।
অন্যকে বিজ্ঞাপনে ক্লিক করতে উৎসাহিত না করা।
IP Address পরিবর্তন করে বিজ্ঞাপনে ক্লিক না করা।
ব্লগে Adult Content এবং Alcohol জাতীয় কোন কিছু শেয়ার না করা।
কনটেন্ট নেই এমন কোন জায়গায় বিজ্ঞাপন কোড না বসানো।
ভাষা সাপোর্ট করে না এমন ব্লগে বিজ্ঞাপন না বসানো।
০২. রেস্পন্সিভ এডসেন্স অ্যাড ইউনিটস ব্যবহার করাঃ
বর্তমান সময়ে Google Adsense আয় বৃদ্ধি করার ক্ষেত্রে Responsive AdSense Units সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। আপনি জরিপ করলে বিষয়টি দেখতে পাবেন যে, প্রতিদিন গড়ে মোট ভিজিটরের ৫০% এরও বেশীলোক আপনার ব্লগে কম্পিউটার ব্যতীত বিভিন্ন ধরনের ডিভাইস, যেমন-মোবাইল, স্মার্টফোন ও ট্যাবলেট থেকে ভিজিট করছে। এ ক্ষেত্রে আপনার ব্লগটি যদি Responsive না হয় এবং Responsive AdSense Units ব্যবহার না করেন তাহলে ভিজিটরদের ৫০% এর বেশী লোক বিজ্ঞাপন দেখা থেকে বিরত থাকছে অর্থাৎ মানে দাড়াচ্ছে আপনি ঐ ৫০% ভিজিটররে কাছ থেকে কোন লাভ অর্জন করতে পারছেন না। কাজেই ব্লগের আয় বৃদ্ধি করার জন্য অবশ্যই ব্লগেকে Responsive ডিজাইন করে নেবেন।
০৩. সঠিক জায়গায় বিজ্ঞাপন কোড বসানঃ
Google Adsense বিজ্ঞাপনের কোডগুলি এমন জায়গায় বসাবেন যাতে করে ভিজিটররা খুবই সহজে দেখতে পায়। এটি আপনার ব্লগের বিজ্ঞাপনে ক্লিক হওয়ার অধিক সম্ভাবনা তৈরি করবে। Google Adsense সবসময় কনটেন্ট Related বিজ্ঞাপন প্রদর্শন করে, কাজেই যখন পাঠক সহজে বিজ্ঞাপন দেখতে পাবে তখন ঐ জিনিসটা তার প্রয়োজন পড়তে পারে। এ ক্ষেত্রে সে তার প্রয়োজনে অবশ্যই বিজ্ঞাপনে ক্লিক করবে। তবে ব্লগের কনটেন্ট Area এর ভীতরে অধিক পরিমানে বিজ্ঞাপন বসানো থেকে বিরত থাকবেন।
০৪. নিয়মিত কনটেন্ট পাবলিশ করাঃ
কনটেন্ট হচ্ছে একটি ব্লগের ট্রাফিক এবং আয় বৃদ্ধি করার প্রধান ও একমাত্র মাধ্যম। আপনার ব্লগে যদি প্রচুর পরিমানে নিত্য নতুন ইউনিক ভিজিটর পেতে চান তাহলে অবশ্যই নিয়মিত নতুন নতুন আর্টিকেল পোষ্ট করুন। আপনি যখন SEO অনুসরণ করে ব্লগে ভালমানের কনটেন্ট শেয়ার করবেন তখন ভিজিটর ও আয় দুটিই বাড়তে থাকবে। তবে একটা জিনিস মনে রাখবেন বেশী কনটেন্ট শেয়ার করতে গিয়ে কখন কারও কপি করা কনটেন্ট শেয়ার করবেন না। এতেকরে আয় বৃদ্ধি হওয়ার পরিবর্তে Adsense একাউন্ট হারাতে পারেন।
০৫. ব্লগের লোড টাইম বৃদ্ধি করাঃ
এটা নিশ্চিত যে, একটি দ্রুত গতীর ব্লগ ভিজিটর এবং বিজ্ঞাপন ক্লিক দুটিই বৃদ্ধি করতে সক্ষম হবে। আপনার ব্লগটি যদি খুব ধীর গতির হয় তাহলে কোনভাবেই ভিজিটর এবং Page View পাবেন না। কারণ ব্লগ যদি Load নিতে বেশী সময় নেয় তাহলে ভিজিটররা বিরক্ত বোধ করবে এবং আপনার ব্লগ থেকে বেরিয়ে যাবে। অধীকন্তু বাংলাদেশের ইন্টারনেট স্পীডের যা অবস্থা তাতে করে বুঝতেই পারছেন যে, ব্লগ স্লো গতির হলে কি হবে।
০৬. অন্য বিজ্ঞাপন রিমুভ করাঃ
Google Adsense বিজ্ঞাপন হতে আয় বৃদ্ধি করতে চাইলে অবশ্যই Adsense থেকে কম গুরুত্ব বহন করে এমন সকল বিজ্ঞাপন Remove করুন। তাহলে আপনার ব্লগের Load Time অনেকাংশেই বৃদ্ধি পাবে। অধিকন্তু Google Adsense তাদের বিজ্ঞাপনের পাশাপাশি অন্য ধরনের বিজ্ঞাপন প্রদর্শন করতে পছন্দ করে না। Google Adsense এর জন্য আবেদন করার পূর্বে আপনি যদি অন্য কোন ধরনের বিজ্ঞাপন ব্যবহার করেন তাহলে অবশ্যই সেটি Remove করবেন। তা না হলে কোনভাবে Adsense টিম আপনার আবেদন অনুমোদন করবে না।
০৭. গুগোল অ্যাডসেন্স রেফারস ব্যবহার করাঃ
আপনার Google Adsense একাউন্টটিকে Google Analytics Account এর সাথে যুক্ত করে রাখলে খুব সহজে প্রতিদিনকার আয়ের পরিমান সম্পর্কে বিস্তারিত জানতে পারবেন। তাছাড়া কোন কোন সাইটের মাধ্যমে, কিভাবে, কি পরিমানে আয় হচ্ছে তাও জানতে পারবেন। যেমন-আপনি ফেইসবুকে বা এ ধরনের আরও বিভিন্ন সাইটে ব্লগের লিংক প্রমোট করার মাধ্যমে কি পরিমান আয় করেন তার বিস্তারিতও শো করবে। এতেকরে আপনি সহজে বুঝতে পারবেন যে, আপনার ব্লগের আয় বাড়ানোর জন্য কি করা উচিত।
০৮. গুগোল প্রোডাক্টস মনিটাইজেশন ব্যবহারঃ
Google Adsense থেকে বাড়তী কিছু আয় করার জন্য Google Products Monitization অপশনগুলি ব্যবহার অর্থাৎ গুগলের অন্যান্য বিভিন্ন প্রোডাক্টসগুলিতে বিজ্ঞাপন প্রদর্শন করাতে পারেন। নিম্নে আমি এ রকম গুরুত্বপূর্ণ কয়েকটি প্রোডাক্টস তুলে ধরছি –
Youtube Monitization: আপনার Youtbe Channel এ যদি ভালমানের ভিডিও থাকে তাহলে Youtube Partner হওয়ার মাধ্যমে ভিডিও গুলিতে Adsense ব্যবহার করে সহজে আয়ের উৎস বৃদ্ধি করতে পারেন। উল্লেখ্য যে, সম্প্রতি সময়ে অনলাইন থেকে টাকা উপার্জন করার মাধ্যম গুলির মধ্যে সবচেয়ে সহজ উপায় হলো YouTube এ ভিডিও Monitized করা।
RSS Feed এ Adsense ব্যবহারঃ আপনি যদি FeedBurner ব্যবহার করে থাকেন কিংবা অনেক Subscriber থাকে তাহলে RSS Feed এর সাথে Adsense Account যুক্ত করে বিজ্ঞাপন প্রদর্শনের মাধ্যমেও আয় বৃদ্ধি করতে পারবেন।
Google Custom Search: আমাদের ব্লগে প্রায় সবাই গুগল কাষ্টম সার্চ বক্স ব্যবহার করে থাকি। আপনি হয়ত জানেন না যে, এই Google Custom Search Box এর সাথেও Adsense Account যুক্ত করে বিজ্ঞাপন প্রদর্শন করানো যায়। কেউ যখন আপনার ব্লগের Google Custom Search ব্যবহার করে কিছু খোঁজবে তখন সার্চ রেজাল্টের উপরে ও ডানে কিছু বিজ্ঞাপন প্রদর্শন করবে। এ বিজ্ঞাপন আয় বৃদ্ধিতেও ভূমিকা পালন করবে।
০৯. গুগোল অ্যাডসেন্স স্ট্যান্ডার্ড অ্যাড সাইজ ব্যবহারঃ
বিজ্ঞাপনের সাইজবেধে আলাদা আলাদা Click Rate ও Demand রয়েছে। উপযুক্ত সাইজের বিজ্ঞাপন ব্যবহার করলে আয়ের পরিমান বৃদ্ধি পাবে। যেমন ধরুন-790×90, 728×90, 336×280, 300×250, 300×600 ও 468×60 সাইজের বিজ্ঞাপনগুলির মূল্য অন্যান্য গুলির চাইতে অনেক বেশী। পাশাপশি খেয়াল করবেন বিজ্ঞাপন যাতে Image ও Text দুই ধরনেরই হয়।
১০. হাই পেয়িং অ্যাডস ও কিওয়ার্ডস:
আমি আগেও বলেছি Adsense সবসময় পোষ্টের সাথে Related বিজ্ঞাপন প্রদর্শন করে। যেমন-আপনি যদি Cricket খেলা সম্পর্কিত কোন পোষ্ট লিখেন, তাহলে ঐ পোষ্টে বেশীরভাগ ক্ষেত্রে Cricket খেলার বিজ্ঞাপন শো করবে। তেমনি আমেরিকার কোন বিষয় নিয়ে পোষ্ট করলে পোষ্টটিতে ঐ দেশের বিজ্ঞাপন প্রদর্শন করবে। এ ক্ষেত্রে আপনি Keyword Tool ব্যবহার করে High Label এর Keywords ব্যবহার করে ভালমানের পোষ্ট শেয়ার করতে পারেন। তাহলে Adsense আপনার ব্লগে ভালমানের বিজ্ঞাপন প্রদর্শন করবে। এতে আপনার ব্লগের আয় দ্বিগুনের চাইতেও বেশী হবে। তাছাড়া Adsense বিজ্ঞাপনের Rate উন্নত দেশগুলিতে বেশী হয়ে থাকে। কাজেই আপনি যদি USA, UK, Indonesia, Australia এর ভিজিটরদের টার্গেট করতে পারেন তাহলে অল্প ভিজিটর দিয়েও সহজে ভালমানের টাকা উপার্জন করতে সক্ষম হবেন।
সর্বশেষঃ Google Adsense থেকে আয় বৃদ্ধি করার জন্য আমরা পোষ্টটিতে সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ টিপসগুলি তুলে ধরেছি। আমি যে কোন ব্লগারকে চ্যালেঞ্জ দিয়ে বলতে পারি কেউ যদি উপরের এই ১০ টি টিপস পরিপূর্ণভাবে অনুসরণ করতে পারেন তাহলে তার ব্লগে Google Adsense ব্যবহার করে নিঃসন্দেহে ভালমানের টাকা (Smart Amount) উপার্জন করতে পারবেন।
No comments:
Post a Comment