বর্তমানে বাংলাদেশের প্রায় ৪০% মানুষ ইন্টারনেটের ব্যবহার করছে । প্রায় ২ কোটিরও বেশী মানুষ সোশ্যাল মিডিয়াতে কানেক্টেড এবং এই সংখ্যাগুলো আগামী ৫-১০ বছরে দ্বিগুণ থেকে দ্বিগুণতর হবে। কিন্তু এই ডিজিটাল মিডিয়ার প্রভাব আমাদের দৈনন্দিন জীবনে বিদ্যমান। প্রোডাক্ট রিসার্চ থেক শুরু করে প্রোডাক্ট কেনা-বেচা এবং রিভিউ সবকিছুই এখন অনলাইন প্ল্যাটফর্মের উপর নির্ভরশীল। বর্তমানে মার্কেটিং প্ল্যাটফর্ম গুলো প্রায় ২০% স্ট্রাটেজি প্রয়োগ করছে অনলাইনে। এটি কয়েক বছর পর ৫০ শতাংশ পর্যন্ত বৃদ্ধি পেলেও অবাক হওয়ার কিছু নেই।
বর্তমান সময়ে পেশা বা একজন ফ্রিল্যান্সার হিসেবে ডিজিটাল মার্কেটিং এর চাহিদা আকাশচুম্বী বলা যায়। নিজের বিজনেসের জন্য ডিজিটাল মার্কেটিং এর খুঁটিনাটি শেখার প্রয়োজনীয়তা অনেক। স্বল্প বাজেটে ডিজিটাল মার্কেটিং এর সহায়তায় কাস্টমার এনগেইজমেন্ট থেকে শুরু করে সেলস জেনারেশন কার্যক্রম গতানুগতিক ট্রেডিশনাল মার্কেটকে পিছনে ফেলে দিয়েছে। ইন্ডিয়াতে ডিজিটাল মার্কেটিং সেক্টরে প্রায় ৮ লক্ষ চাকরি বিদ্যমান, আমাদের দেশেও এই সংখ্যা নেহাৎ কম নয় । আর এই মার্কেটিং ক্ষেত্রগুলোর মধ্যে বহুল প্রচলিত ক্ষেত্রগুলো হলোঃ Social Media Marketing, Content Marketing , Search Engine Marketing, Big Data Analysis, IOT, Artificial Intelligence ইত্যাদি।
সুতরাং, বুঝতেই পারছেন ডিজিটাল মার্কেটিং-এ ক্যারিয়ার ডেভেলপ করার সুযোগ কতখানি।
অনলাইনে আয় এই বিষয়টি নিয়ে আমাদের দেশের তরুণ তরুণীদের মাঝে ভীষণ আগ্রহ রয়েছে। বিশেষ করে যারা চাকরি প্রার্থী অথবা ছাত্র, যারা কিনা নিজের আয়ে চলতে চায়। কেনই বা থাকবেনা, আমাদের দেশে চাকরির যে অবস্থা তাতে একজন গ্র্যাজুয়েটের প্রাইভেট কোম্পানিতে সেলারি শুরু হয় ১০-১৫ হাজারের মধ্যে আর সরকারি চাকরিতো সোনার হরিণ। যাইহোক অনেকেই শুনেছেন অলনাইনে অনেক টাকা আয় করা যায় (মাসে ১ থেকে ৫ লক্ষ টাকা ইত্যাদি) তবে কি ভাবে এই টাকা আয় করা যায় তা জানেনা আবার অনেকে আছে জানেন তবে পরিপূর্ণ ধারণা নেই। যদি আপনি অনলাইনে ক্যারিয়ার গড়ার চিন্তা করে থাকেন তবে আপনি এই পোস্টের শেষ পর্যন্ত পড়বেন আশাকরি একটা ভালো ধারণা পাবেন।
অনলাইন আয়ের যে কয়টি মাধ্যম আছে তার মধ্যে জনপ্রিয় একটি মাধ্যম হলো এফিলিয়েট মার্কেটিং। হ্যাঁ বন্ধুরা আজ আমি আপনাদের সাথে আলোচনা করবো এফিলিয়েট মার্কেটিং করে কিভাবে ক্যারিয়ার গড়বেন। তবে আগেই বলে রাখি এফিলিয়েট মার্কেটিং শেখা ও আয় শুরু করা খুব একটা সহজ বিষয় না তবে আপনি ধৈর্য ধরে স্টেপ বাই স্টেপ সব শিখে কাজ শুরু করলে এফিলিয়েট মার্কেটিং করে ভালো আয় করতে পারবেন।
অ্যাফিলিয়েট মার্কেটিং কি ? (What is Affiliate Marketing?)
অ্যাফিলিয়েট মার্কেটিং(Affiliate Marketing) যদি বাংলায় বলতে যাই তা হল দালালি বা কমিশনে কাজ করা। দালালরা যা করে তা হল দুটি পক্ষের মধ্যে কথা বা কোন একটি চুক্তি করিয়ে দিবে তার জন্য্ তারা কমিশন নিবে। আ্যাফিলিয়েট মার্কেটিং ও একই। আপনি তাদের প্রোডাক্ট বিক্রি করে দিবেন। তারা এর জন্য আপনাকে কমিশন দিবে। অথ্যাৎ কমিশন ভিত্তিক বিক্রয় প্রক্রিয়াটাই হল অ্যাফিলিয়েট মার্কেটিং।
অ্যাফিলিয়েট মার্কেটিং প্লাটফর্ম:
- Amazon Affiliate Marketing
- JVzoo
- WarriorPlus
- PaySale......etc.
অ্যামাজন অ্যাফিলিয়েট মার্কেটিং কি ?(What is Amazon Affiliate Marketing?)
অ্যামাজন হল একটি জায়েন্ট ই-কমার্স সাইট। আপনার বা আপনার সাইট এর রেফারেন্স দিয়ে যদি অ্যামাজন এর প্রোডাক্ট বিক্রি করে দেন তাহরে আপনি কিছু কমিশন পাবেন। এটিই হল অ্যামাজন অ্যাফিলিয়েট মার্কেটিং (Amazon Affiliate Marketing)। অ্যমাজন এসোসিয়েট প্রোগ্রাম ই অ্যমাজন অ্যাফিলিয়েট প্রোগ্রাম।
তারা কি পরিমান কমিশন দেয় ? (How much they pay?)
সাধারনত অ্যামাজন প্রোডাক্টে পরিমান অনুযায়ী কমিশন রেট নির্ধারন করে। সাধারনত এটা মাসিক হিসেবে হিসাব করে তারা। আপনি যাদি এক মাসে ৬টা বা এর কম প্রোডাক্ট সেল করেন তাহলে আপনি প্রোডাক্টের দামের ৪% হারে কমিশন পাবেন। আপনি যাদি মাসে ৭টা থেকে ৩০ টার মত প্রোডাক্ট সেল করেন তাহলে আপনি ৬% হারে কমিশন পাবেন। আপনি যদি ৩১ থেকে ১১০ এর মধ্যে প্রোডাক্ট সেল করেন তাহলে ৬.৫% হারে কমিশন পাবেন। আবার আপনি যদি ১১১ থেকে ৩২০ এর মধ্যে প্রোডাক্ট সেল করেন তাহলে ৭% হারে কমিশন পাবেন। আপনি যদি ৩২১ থেকে ৬৩০ এর মধ্যে মাসিক সেল করতে পারেন তাহলে আপনি কমিশন পাবেন ৭.৫০% করে। সেল যদি ৬৩১ থেকে ১৫৭০ এর মধ্যে হয় কমিশন হার হবে ৮%। যদি সেল হল ১৫৭১ থেকে ৩১৩০ এর মধ্যে তবে হার হবে ৮.২৫%। আর যদি আপনি ৩১৩০ এর উপর সেল আনতে পারেন তবে কমিশন পাবেন ৮.৫০% করে। সাধারনত এই হারে কমিশন ধরা হয়। আবার বিভিন্ন প্রোডাক্ট ক্যাটাগরি অনুযায়ী অনেক প্রোডাক্টের কমিশন ভিন্ন হয়। কিছু প্রোডাক্টে তারা ১০% ও কমিশন পে করে।
কেন আমরা অ্যামাজন অ্যাফিলিয়েট করব ? (Why we do Amazon Affiliate Marketing?)
এখন আমাদের মনে প্রশ্ন জাগে এত অ্যাফিলিয়েট প্রোগ্রাম থাকতে কেন আমরা অ্যামাজন অ্যাফিলিয়েট করব। প্রথমত অ্যামাজনের সব প্রোডাক্টই মানসম্মত ও ভালো। অ্যামাজনের মার্কেটে সুনাম আছে এবং সবাই এটিকে চিনে। আপনি যখন একজন বায়ার অ্যামাজনে পাঠান তখন সে ২৪ ঘন্টার মধ্যে যে কোন প্রাডাক্টই কিনুক তার কমিশন আপনি পাবেন। এত আপনি ঐ প্রোডাক্টের মার্কেটিং না করেও তার কমিশন পেতে পারেন। এছাড়া অ্যামাজনে ট্রাফিক পাঠালে সে যেই প্রোডাক্ট টি কিনবে অ্যামাজন তার সাথে সাথে আরোও রিলেটেড আরোও প্রোডাক্ট সাজেস্ট করে। এথেকে সেল হলেও সেলের কমিশন আপনি পাবেন। এর ফলে আপনার কমিশন অনেক পরিমানে বৃদ্ধি পাবে। এই সুবিধা গুলোর জন্য আমারা অ্যামাজনে মার্কেটিং করব।
আমাদের এক্ষেত্রে কি পরিমান সময় ব্যয় করতে হবে ? (How much time you have to spent?)
অ্যামাজন অ্যাফিলিয়েট মার্কেটিং করার ক্ষেত্রে প্রাধানত আপনার কাজের গতি ও স্কিল এর উপর নির্ভর করে। এক্সপার্টদের ক্ষেত্রে ১-২ ঘন্টা কাজ করলে হয়। মিড লেবেলের মার্কেটারদের ক্ষেত্রে ২-৪ ঘন্টা সময় দিলে হয়। এবং বিগেনারদের জন্য দিনে কমপক্ষে ৩-৫ ঘন্টা সময় দিলে ভালো।
আপনাকে কি পরিমান টাকা এতে ইনভেস্ট করতে হবে ? (How much money have to invest?)
অ্যামাজন অ্যাফিলিয়েট মার্কেটিং এ যদি সব কাজ আপনি নিজে করেন তাহলে শুধু ডোমেইন ও হোস্টিং এর খরচ প্রয়োজন হবে। সাধারনত $৫০০ ডলার এর বাজেট নিয়ে শুরু করলে ভালো করতে পারবেন। এছাড়া অ্যামাজন নিশ সাইট করার সম্পূর্ণ খরচ সম্পর্কে পডুন Amazon Niche Site Budget
আমারা তাদের কাছ থেকে কিভাবে পেমেন্টে নিতে পারি? (How we will get payment from amazon?)
আমরা তিনটি উপায়ে অ্যামাজন থেকে পেমেন্ট পেতে পারি।
১. অ্যামাজন গিফ্ট কার্ডের মাধ্যমে।
২. ডায়রেক্ট ব্যাংক ডিপোজিট।
৩. চেকের মাধ্যমে।
আমরা ১ ও ৩ দিয়ে পেমেন্ট নিতে পারব না কারন বাংলাদেশে সাপোর্টেড না। আমরা ২ নং মেথড ব্যবহার করে Payoneer এর মাধ্যমে পেমেন্ট নিব। এক্ষেত্রে কমপক্ষে ১০$ হলে আমরা পেমেন্ট নিতে পারব।
১. অ্যামাজন গিফ্ট কার্ডের মাধ্যমে।
২. ডায়রেক্ট ব্যাংক ডিপোজিট।
৩. চেকের মাধ্যমে।
আমরা ১ ও ৩ দিয়ে পেমেন্ট নিতে পারব না কারন বাংলাদেশে সাপোর্টেড না। আমরা ২ নং মেথড ব্যবহার করে Payoneer এর মাধ্যমে পেমেন্ট নিব। এক্ষেত্রে কমপক্ষে ১০$ হলে আমরা পেমেন্ট নিতে পারব।
No comments:
Post a Comment